মুসকান মটরস শো-রুমে বিস্ফোরণে দগ্ধ সাগর এর মৃত্যু

ফতুল্লায় মুসকান মটরস নামের অটো রিক্সা-ইজি বাইকের শো-রুমে বিস্ফোরণে দগ্ধ সাগর নামের এক কিশোরের (১৭) মৃত্যু হয়েছে।

নিহত সাগর মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার পাঁচগাও শেখ বাড়ীর আলমগীরের পুত্র। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীনবস্থায় তিনি মারা যান।


এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মুসকান মটরসের (মুসকান টাওয়ার) মালিক স্বপন হোসেন (৬০)কে আসামী করে বুধবার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম মিয়া(পি,পি,এম)। তিনি জানান, মুসকান মটরসে বিস্ফোরণে আহত সাগর সোমবার বিকেলে চিকিৎসারতবস্থায় মারা

গিয়েছে। এঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মুসকান মটরসের মালিক স্বপন  হোসেন কে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে।  তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে তিনি জানায়।


মামলায় উল্লেখ্য করা হয়,নিহত সাগর ফতুল্লার উত্তর  কাশিপুরস্থ রহমান মিয়ার বাসায় ভাড়ায় বসবাস করিয়া একই এলাকার মুসকান টাওয়ারের মালিক স্বপন হোসেনের মালিকানাধিন মুসকান মটরস নামের অটো-ইজি বাইক ও ব্যাটারীর শো রুমে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলো। 


২৯ জুন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মুসকান মটরসের অপর কর্মচারী টিটু(৪৮),আবির (২৭), রাজিব (২২), রানা (৩৮) সহ বাদীর ছেলে নিহত সাগর শো-রুমের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করা মাত্র বিকট শব্দে শোরুমে বিস্ফোরন ঘটে। এতে সকলেই দগ্ধ হয়।


বিস্ফোরনের ফলে মুসকান টাওয়ারের নিচতলার মুসকান মটরসের দেয়াল ভেঙ্গে দক্ষিণ পাশ্বে থাকা রফরফ মটরসে গিয়ে পরলে সেই শোরুমের সকল অটোরিক্সা ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

এ সময় উত্তর পাশের দেয়াল ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী সিরাজুল ইসলামের টিন শেড বিল্ডিংয়ের উপর গিয়ে পরলে বাড়ীর আসবাবপত্র ভাংচুরের পাশাপাশি আহত হয় বাড়ীর মালিক সিরাজুল ইসলাম (৬০), রোকসানা বেগম (৫৫), সুমন (৩৮) ও রাসেল (৩৬)। 


উল্লেখ্য যে,শনিবার সকালে ফতুল্লার কাশিপুর ভোলাইলে মুসকান মটরস নামের একটি ইজিবাইক শো-রুমে বিস্ফোরন ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন জানান, সকালে বিকট শব্দে মুসকান মটরস্ নামে অটোরিকশার শো-রুমে বিস্ফোরণ হয়। এ সময় পাশের একটি একতলা সেমিপাকা  রফ রফ অটো রিক্সার কারখানা  ও আরেকটি দোতলা পাকা ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে।

বিস্ফোরণের বিকট শব্দ অন্তত এক কিলোমিটার দূর থেকেও শুনতে পান অনেকে। এ শব্দে আশেপাশের কয়েকটি ভবনের জানালার কাচও ভেঙে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।


নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) ফখর উদ্দিন আহম্মাদ বলেন, ‘ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশে চারতলা ভবনের নিচতলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অ্যাসেম্বল করা হয় এবং বিক্রি করা হয়৷ প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে অসংখ্য ব্যাটারি রয়েছে। এসব ব্যাটারি থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।


সিরাজুল হক বলেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। সাথে সাথে আমাদের বিল্ডিংয়ের দেয়াল ধসে পড়ে৷ দেয়ালে চাপা পড়ে আমাদের পরিবারের লোকজন আহত হয়।


সিরাজুলের অভিযোগ, অটোরিকশার শো-রুমের ভেতর অবৈধ ক্যামিকেল রাখতো মালিক স্বপন। ওই ক্যামিকেল থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।


সরেজমিনে শো-রুমের দুই পাশের দেয়াল ধসে পড়ে গেছে দেখা যায়৷ উপরের সিলিং ফ্যানগুলো ধুমরে-পুড়ে গেছে। ভেতরে বেশকিছু অটোরিকশা, ব্যাটারি ও প্ল্যাস্টিকের গ্যালন ভর্তি ক্যামিকেল দেখা যায়।


 শো-রুম ও নির্মাণাধীন ভবনটির মালিক স্বপন হোসেন বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা অ্যাসেম্বল করে বিক্রি করেন তিনি৷ কীভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে সে বিষয়ে তার ধারণা নেই।