সৌদিতে বর্তমানে কর্মরত প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশি

চলতি বছরই মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব ছাড়বেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ১২ লাখ কর্মী। রিয়াদভিত্তিক জাদওয়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির এক প্রোজেকশনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কোম্পানিটি বলছে, সৌদি নাগরিকদের জন্য চাকরির বাজার আরও বড় করতে দেশটির সরকারের পরিকল্পনা ও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এটা ঘটবে। সৌদিতে বর্তমানে কর্মরত প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশি।

জাদওয়া ইনভেস্টমেন্ট জানিয়েছে, এত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সৌদি ছাড়লেও দেশটিতে বেকারত্বের হার সহসাই কমবে না। বর্তমানে সেখানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ। চলতি বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত এটা অপরিবর্তিত থাকবে।

সৌদি গ্যাজেটের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে জ্বালানি খাতে চলমান সংকটের কারণে এত বিপুল সংখ্যক কর্মী সৌদি ছাড়লে দেশটির অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পাশাপাশি যেসব সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেগুলো হলো-হসপিটালিটি, ফুড সার্ভিসেস, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ও সাপোর্ট অ্যাকটিভিটিস, যার মধ্যে রয়েছে ভাড়া ও লিজ কর্মকাণ্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, সিকিউরিটি ও বিল্ডিং সার্ভিস।

যদিও এ ক্ষেত্রে সৌদি নাগরিকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। নিজেদের কর্মসংস্থানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তা ছাড়া চতুর্থ ত্রৈমাসিকের সবচেয়ে বড় অগ্রগতির ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবসার সামগ্রিক পরিবেশে উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বহু বছর ধরেই বিদেশি কর্মীদের পরিবর্তে নিজ দেশের নাগরিকদের নিয়োগ দিয়ে চাকরির বাজারকে ‘সৌদিকরণ’ করার চেষ্টা করছে সরকার। কয়েক বছর ধরে আর্থিক প্রয়োজনীয়তা এবং মনোভাবের পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেকটাই সফল হয়েছে তারা। তাই এক সময় বিদেশি কর্মীদের আধিপত্য থাকা বিভিন্ন পদ যেমন-ডেলিভারিম্যান ও হোটেল রিসেপশনিস্টের মতো বিভিন্ন চাকরিতে সৌদি নাগরিকদের উপস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে। জ্বালানি বাজারে সবশেষ সংকটের কারণেও বহু বিদেশি কর্মীকে সৌদি আরব ছাড়তে হয়েছে। যদিও সেসব পদে খুব কম সৌদি নাগরিকই যোগ দিয়েছেন।

জাদওয়া জানায়, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৩ হাজার বিদেশি কর্মী সৌদি ছেড়েছে। সেক্ষেত্রে ট্রাভেল, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সেক্টরের মতো বিভিন্ন খাতও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সবমিলিয়ে ১২ লাখ বিদেশি কর্মী ফিরে গেলে আরও বেশি সংকট দেখা দেবে, যা দেশটির শ্রমবাজারের ৯ শতাংশ।