পাঁচ মাসের বেশি সময় বিরতির পর শ্রীলংকায় খেলতে যাবেন টাইগাররা, কিন্তু সেই সফরে বাংলাদেশ দল এখনো ঘোষণা হয়নি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেছিলেন, ১০-১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দল ঘোষণা। সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন দল ঘোষণা হয় না। শুক্রবার যখন দল ঘোষণা হলো না তখন প্রশ্ন দেখা দিল তাহলে শনিবার কি দল ঘোষণা হবে? নাকি ঘোষণা আসবে আরও পরে?
দল ঘোষণায় বিলম্ব দেখে এমন অনেক প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান আকরাম খানের কথায় সে প্রশ্ন আরও ডালপালা ছড়াচ্ছে। জানা গেছে, দল নির্বাচন, খেলোয়াড় সংখ্যা আর ঘোষণা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। আর তাই দল ঘোষণায় এই বিলম্ব।
প্রথম সংশয় দেখা দিয়েছে স্কোয়াডে খেলোয়াড় সংখ্যা নিয়ে। প্রধান নির্বাচক নান্নু ও আকরাম খান বারবার বলেছেন, শ্রীলংকা সফরের টেস্ট দল হবে ২০-২১ জনের। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে হঠাৎ এক জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন প্রকাশের পর শ্রীলংকা সফরের দলের সংখ্যা নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্তির উদ্রেক ঘটেছে।
সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলংকা সফরের জন্য ২৭ ক্রিকেটারের ‘জিও’ (গভর্নমেন্ট অর্ডার) করা হয়েছে। যেকোনো বিদেশ সফরের আগে মূল দলের বহরের সঙ্গে আরও বাড়তি কজন ক্রিকেটারেরও জিও করা হয়। সেটা করা হয় জরুরি অবস্থার কথা মাথায় রেখে।
সফরের কোনো একপর্যায়ে কারও ইনজুরি হলে বিকল্প পারফরমারের প্রয়োজন হয়। তখন যাতে সেই বিকল্প পারফরমারের ভ্রমণে কোনো সমস্যা না হয়, তাই আগেভাগেই গভর্নমেন্ট অর্ডার করিয়ে নেওয়া হয়। এবার শ্রীলংকা সফর যেহেতু করোনার মধ্যে, তাই কজন বাড়তি খেলোয়াড়ের ‘জিও’ করানো হয়েছে।
শ্রীলংকা যাওয়ার পর কেউ ইনজুরির শিকার হলে কিংবা কারও করোনা উপসর্গ দেখা দিলে বিকল্প পাঠাতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তাই আগাম জিও করে রাখা। আর সে কারণেই মূলত সংখ্যাটা ২৭। কিন্তু সেটাই বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারও কারও ধারণা, প্রাথমিক দলই হবে ২৭ জনের।
কিন্তু আসলে ব্যাপারটি মোটেই ঠিক নয়। শুক্রবার প্রধান নির্বাচক সে বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়েছেন। তিনি জানান, ‘যেকোনো সফরের আগে কিছু রিজার্ভ বা স্ট্যান্ডবাই ক্রিকেটারের জিও করিয়ে রাখা হয়। তা জরুরি অবস্থার কথা ভেবেই করা হয়। কেউ হঠাৎ ইনজুরির শিকার হলে যাতে দেশ থেকে বিকল্প পেস্নয়ার নিতে সরকারের অনুমতি পেতে সমস্যা না হয়, তাই গভর্নমেন্ট অর্ডার আগেভাগে করানো হয়। এবারও হয়েছে, সে সংখ্যাটি ২৭ জনের। কিন্তু সেটাই শ্রীলংকা সফরের প্রাথমিক দল নয়। আসলে দল হবে ২০-২১ জনের, ২৭ জনের নয়।’
দলের সংখ্যা নিয়ে প্রধান নির্বাচক আরও একটি নতুন কথা শুনিয়েছেন, যা শুনে মনে হবে ২৭ জন তো বহু দূরে, দল ২০-২১ জনের চেয়েও কম হতে পারে। নান্নুর ইঙ্গিত, শেষপর্যন্ত ১৭-১৮ জনের দলও শ্রীলংকা যেতে পারে।
অন্যদিকে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান আকরাম খান অবশ্য দল ছোট হওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেন। তার কথা, ‘যেহেতু লম্বা সফর; তিনটি টেস্ট এবং কিছু প্রস্তুতি ম্যাচও আছে। তাই ব্যাকআপ পারফরমারের দরকার আছে। প্রথাগত ১৫-১৬ জনের স্কোয়াড নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। ক্রিকেটার বাড়িয়ে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত কাজ হবে। তাই স্কোয়াড কুড়ির জনের চেয়ে কম করার সুযোগ নেই।’
আকরাম খান আরও একটি বড় তথ্য জানিয়েছেন, তা হলো লংকান বোর্ড এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিশ্চিত করেনি। আকরাম খান জানিয়েছেন, ‘লংকান বোর্ড এখনো পরিষ্কার করেনি যে, কতদিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে? প্রথমে কথা ছিল, এটির দরকার নেই। আর এখন শোনা যাচ্ছে, দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতেও হতে পারে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘লংকান বোর্ড কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু জানাচ্ছে না বলেই, স্কোয়াড ঘোষণায় দেরি হচ্ছে। কেননা সত্যিই যদি বেশি দিন কোয়ারেন্টিনে কাটাতে হয়, তাহলে বেশি ক্রিকেটার নিয়ে লাভ কী? কোয়ারেন্টিনে না থাকতে হলে আর সমস্যা নেই। তখন বহর বড় হলেও কোনো সমস্যা হবে না।’